সসেমিরা
লেখক: নাবিল মূহতাসিম
প্রকাশক: অবসর প্রকাশনী
জনরা: থ্রিলার
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১৬০
প্রকাশকাল: মার্চ ১৪, ২০২১
লেখক: নাবিল মূহতাসিম
প্রকাশক: অবসর প্রকাশনী
জনরা: থ্রিলার
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১৬০
প্রকাশকাল: মার্চ ১৪, ২০২১
সসেমিরা লেখকের কথা
দু'হাজার বিশের অমর একুশে গ্রন্থমেলার পুরো মাসে একদিন শুধু একটা সার্জিক্যাল মাস্ক পরেছিলাম আমি। ওই দিন ছিলো একুশে ফেব্রুয়ারি—প্রবল ধুলোর হাত থেকে বাঁচতে মাস্কটা পরা। আর কিছু না।
অথচ তার এক মাসের ভেতরে শুরু হলো লকডাউন। পুরো বছরটাই কেমন মাস্ক পরে দম খাটো করে, হাতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার মাখতে মাখতে চামড়া নষ্ট করে, ঘরের ভেতরে থাকতে থাকতে মাথা গুলিয়ে কাটিয়ে দিলাম আমরা! বিশ্বাসই হতে চায় না।
কোয়ারেন্টিনের সময়ে মাসের পর মাস চলে যাচ্ছিলো কিন্তু চেষ্টা করেও কিছু লিখতে পারছিলাম না। অথচ মাথায় বুদ্বুদ তুলছিলো সসেমিরা—যার প্লট আরো বছর দুয়েক আগে সাজানো। কাছের বন্ধুদের অনেকবার শুনিয়েছি, কিন্তু লেখায় ধরতে পারছিলাম না। বছরের শেষে এসে সেটা পারা গেলো। ভালো লাগছে।
বাজিকর সিরিজ দিয়ে স্পাই চরিত্র দাঁড়া করিয়েছি। সসেমিরা-তে এক ডিটেকটিভকে নিয়ে কাজ করেছি। আপনারা, পাঠকরা ভালো বুঝবেন যে কতটুকু কী হয়েছে। ডিটেকটিভের আইডিয়া প্রথম বলেছি সায়েমকে। প্লট পুরোটা শুনিয়েছিলাম কেপি ইমনকে। নানান বিষয়ে ফিডব্যাক নিয়েছি পায়েলের কাছ থেকে। বন্ধুগণ, ধন্যবাদ।
সসেমিরা রিভিউ
............................................................................
উত্তরবঙ্গের হিমালয়ঘেঁষা জেলা শহর কীর্তিমারীতে ছুটি কাটাবার কথা ভাবছেন? চা বাগান আর পাহাড় দেখবার, বা বনে একটু শিকার করবার, বা শহরের রেড লাইট এরিয়ায় একটু মৌজ করবার ইচ্ছা?
আসতে পারেন, খাসা জায়গা। তবে, ইয়ে, জানিয়ে রাখি--এক পলাতক দাগী আসামি ছুরির ঘা খেয়ে মরতে মরতে ফিরে এসেছে শহরে। এক ভয়ানক অপরাধ নাকি করেছে সে, জীবনের শেষ অপরাধ : যেটার সূত্র রেখে গেছে একটা হেঁয়ালিতে। এদিকে শহরের সবচেয়ে বনেদি আর বড়লোক পরিবার বসুনিয়াদের বাড়ির বউ নিখোঁজ, সাথে করে নিয়ে গেছে বাচ্চা মেয়েকে। আর ইন্সপেক্টর রইস এমন সব আলামত পাচ্ছে যাতে হাড় হিম হয়ে যাচ্ছে তার মতো ঝানু অফিসারেরও।
দুটো ঘটনার মাঝে কুৎসিত একটা যোগসূত্র খোঁজার জন্য চালচুলোহীন চেহারার একটা লোক চষে বেড়াচ্ছে পুরো শহর। বিখ্যাত নেহালের পুরি বা সালামের চা খাবার সময় তাকে দেখলে ভড়কাবেন না--'টিকটিকি' কামালের কাজই হচ্ছে গন্ধ শুঁকে বেড়ানো। কিন্তু একেবারে উড়িয়েও দেবেন না তাকে, শহরকে এই সসেমিরা অবস্থা থেকে হয়তো বের করতে পারবে সে-ই।
যাকগে। তো এবারের শরতে চলে আসুন কীর্তিমারীতে--ভুলতে পারবেন না এই জায়গাকে, কথা দিচ্ছি।
............................................................................গোয়েন্দা বা ডিটেকটিভ চরিত্র বলতে আমাদের মাথায় যে গৎবাঁধা, রাশভারী,হাই পার্সোনালিটিসম্পন্ন ক্যারেক্টার ইমেজ দাঁড়িয়ে গেছে, এই বই সেই প্রথাকে একদম ভেঙে চুরে নতুন আঙ্গিকে দাঁড় করিয়েছে। এক অনন্যরূপে আবির্ভুত হয়েছেন।কাহিনীর শুরুতে তেমন প্রয়োজনীয় না মনে হলেও কাহিনী এগোতে থাকলে ধীরে ধীরে বোঝা যায়,সাধারণ চেহারার পুলিশের এক সোর্স, বইপোকা, ড্রাগ ডিলার, উত্তরবঙ্গের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলা মানুষ আবার একইসাথে ক্ষুরধার মস্তিষ্কের অধিকারী এই "টিকটিকি" বা "ফেউ" কামালই মূল চরিত্র। এরকম ভিন্নধর্মী চরিত্রের জন্য লেখক বাহবা পেতেই পারেন।
উত্তরবঙ্গে কাল্পনিক একটি অঞ্চল তৈরি করলেও লেখকের বর্ণনাগুণে মনেই হবে না এটা আসল নয়। খুব চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
আর এরকম "অদ্ভুত" নামকরণের কারণ বই পড়লেই ধীরে ধীরে জানা যাবে।
থ্রিলার পাঠক হিসেবে এই বই পড়লে একদমই সময় নষ্ট হবে না,এইটুকু বলাই যায়।
Tags
Bangladeshi